যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটেডের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়

নাগরিক সংবাদ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমাদের কিছু আঁতেল আছে, তাদের ধারাবাহিক গণতন্ত্র পছন্দ না। তারা সবসময় দেশে ও দেশের বাইরে বদনাম তো করবেই, আবার দেশের মধ্যেও আজেবাজে লিখে যাচ্ছে। লিখছে যে, কিছুই নাকি হয়নি।” এছাড়া যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটেডের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়।

সোমবার (২৭ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে “মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৩” উদযাপন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা (সমালোচনাকারীরা) মনে করে, একটা অস্বাভাবিক সরকার ক্ষমতায় থাকলে তাদের কদর বাড়ে। কারণ যারা অবৈধভাবে যারা ক্ষমতায় আসে, তাদের কিছু লোক হাতের লাঠি লাগে বা খুঁটি লাগে। সেই লাঠি হতে পারছে না বলেই তাদের মনে খুব দুঃখ।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ২১ বছর এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আট বছর; সব মিলিয়ে এই ২৯ বছর বাংলাদেশের ইতিহাসে “কালো অধ্যায়” বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “সেই কালো মেঘ কেটে দেশের মানুষের জন্য আমরা একটা নতুন সূর্যের আলো নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ, সেই পথেই এগিয়ে যাবে।”

সরকারপ্রধান বলেন, “এই বাংলাদেশে স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। যে অবৈধ শক্তি পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসেছিল, তাদের কোনো প্রেতাত্মা যেন আবার দেশের মানুষের স্বাধীনতা নস্যাত করতে না পারে। আবার মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে তার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও দেশের জনগণকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো সজাগ থেকে দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে।”

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি বিদেশিদের কাছে নালিশ করে, তাদের ওপরে নাকি খুব অত্যাচার করা হচ্ছে। অত্যাচার তো আমরা করি নাই। অত্যাচার করেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। এর শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছেন। সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, সৈনিক থেকে শুরু করে প্রায় ৫ হাজার মানুষকে নির্বিচারে ফাঁসি দিয়েছে, গুলি করে হত্যা করেছে। পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের লাশ পর্যন্ত পায়নি। সব লাশ গুম হয়ে গেছে।”

বিএনপির জন্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করে প্রথমে লেবাস পড়ে ক্ষমতা দখল করা। রাজনীতিকে গালি দিয়ে ক্ষমতা দখল করে আবার সেই লেবাস খুলে নিজেরাই রাজনীতিবিদ হয়ে গেছে। ক্ষমতা উচ্ছিষ্টভোগীদের নিয়ে দল গঠন করার কালচার শুরু হয় বাংলাদেশে।”

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “অবৈধ দখলকারীদের হাতে তৈরি করা যে সংগঠন তারা নাকি এখন দেশে গণতন্ত্র চায়। যাদের জন্মই গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়নি। যাদের জন্ম মিলিটারি ডিক্টেটেডের মধ্য দিয়ে, তারা আবার গণতন্ত্র চায়। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র দেয়নি, তারা গণতন্ত্র দেবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা লড়াই করে। ওদের জিজ্ঞেস করতে হয়, তাদের জন্মটা কোথায়? অবৈধ দখলদারি এটা তো আমাদের কথা না। আমাদের উচ্চ আদালত বলে দিয়েছেন যে, জিয়া-এরশাদ সম্পূর্ণ অবৈধ। তারপর তারাও নাকি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামও করে।”

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।