বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতির পিতার স্বপ্নপূরণ করা আমার লক্ষ্য- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: শুক্রবার, অক্টোবর ৬, ২০২৩

নাগরিক সংবাদ ডেস্কঃ এক সময় বাংলাদেশকে ‘খাটো করে’ দেখতো যে বিশ্ব, তারাই এখন দেশটিকে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ বিবেচনা করে মর্যাদার চোখে দেখে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এমনি এমনি এটা অর্জিত হয়নি। এর নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা আর তার বাস্তবায়ন।

শুক্রবার গণভবনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘মা-বাবা পরিবার-পরিজন হারানো আমার হারানোর কিছু নেই। কিছু নিতে আসি নাই, দিতে এসেছি। জাতির পিতার স্বপ্নপূরণ করা আমার লক্ষ্য। এ দেশের দরিদ্র সাধারণ মানুষের জন্যই আমার কাজ, এটাই আমি করে যাচ্ছি। আজকে বিশ্বব্যাপী দেশ মর্যাদা পাচ্ছে। আগে বাংলাদেশ শুনলে নাক সিটকাতো, এখন বাংলাদেশ শুনলে আলাদা মর্যাদা নিয়ে তাকায়। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দেখে। এটা বাতাসে হয়নি। এটা আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার কারণে হয়েছে।’

এ সময় ডেঙ্গু প্রতিরোধে তার সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে নিজের ঘরবাড়ি-আঙ্গিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী তার সফরে খালি হাতে ফিরে এসেছেন- বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতারা মাইক লাগিয়ে কি হারে মিথ্যা কথা বলে এটা দেশবাসী জানে। মিথ্যা বলা এবং সব কিছুকে খাটো করে দেখা তাদের অভ্যাস।’ এ নিয়ে দেশবাসীকে কান না দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওদের (বিএনপি) জন্মই হয়েছে মিথ্যার ওপর। আর টিকে আছে তার ওপরই। কোনো শেকড় তো নেই। অবৈধভাবে অস্ত্র হাতে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে যাদের জন্ম হয় তারা মিথ্যার ওপরই থাকে।’

২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পরিচালন খাতে সরকার কর্তৃক গৃহীত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে ১০ কোটি ৬১ লক্ষের বেশি লোক সুবিধাভোগী হয়েছেন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এর মধ্যে দুঃস্থদের খাদ্য সহায়তা (ভিজিএফ) (২ কোটি ৫০ লক্ষ জন), খাদ্য ও অর্থ সহায়তা (জিআর) (৩৩ লক্ষ জন), কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা)/ কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) (২৮ লক্ষ জন), ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) (৪৫ লক্ষ জন), খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি (৬৩ লক্ষ জন), বয়স্ক ভাতা কার্যক্রম (৫৭ লক্ষ জন), বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা দুঃস্থ মহিলা ভাতা কার্যক্রম (২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার জন), প্রতিবন্ধী ভাতা কার্যক্রম (২৪ লক্ষ জন), প্ৰাথমিক শিক্ষা স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপবৃত্তি কর্মসূচি (১ কোটি ৪০ লক্ষ জন), মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপবৃত্তি (৫৭ লক্ষ জন) দেয়ার মাধ্যমে তারা উপকৃত হচ্ছেন।

রিজার্ভ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘করোনার সময়ে আমাদের আমদানিসহ সব কিছু বন্ধ ছিল। যে কারণে আমাদের রিজার্ভ বেড়েছিল। কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে আমাদের সবকিছু স্বাভাবিক হলে সব জিনিস যখন আমদানি করতে শুরু হলো, তখন স্বাভাবিকভাবেই রিজার্ভ কমবে।’

এ সময় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন সরকার গঠনের আগে রিজার্ভ ১ বিলিয়নও ছিল না। ০.৭৭ মিলিয়ন রিজার্ভ ছিল। ৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি তখন রিজার্ভ কতো ছিল? ২.৫ মিলিয়ন, বিলিয়নের ধারে কাছেও ছিল না। যেটুকু বেড়েছে আমাদের সরকারের সময়ে বেড়েছে। এখন যদি বলে রিজার্ভ রক্ষা করতে হবে তাহলে বিদ্যুৎ-পানি-সার বন্ধ করে দিই। রিজার্ভ বেশি রাখা প্রয়োজন না কি মানুষের ভালোমন্দ, তাদের জন্য কাজ করা প্রয়োজন? সব বন্ধ করে দিই তাহলে রিজার্ভ ভালো থাকবে। ২০০ ডলারে গম ৬০০ ডলারে কিনতে হচ্ছে, ৮০০ ডলারের পরিবহন খরচ ৩ হাজার ৪ হাজার ডলার লাগছে। তারপরও পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্যই আমি উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলেছি।’

বিএনপি চুরি করা টাকা দিয়ে আন্দোলন করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ কিছু টাকা পেলে খারাপ কি? আন্দোলন করতে থাকুক। তবে অগ্নি-সন্ত্রাসের মতো কিছু করে মানুষের ক্ষতি করতে চাইলে ছাড় দেয়া হবে না। সাধারণ মানুষই তাদের বিরুদ্ধে অতীতে রুখে দিয়েছিল। এবারও রুখে দেবে।’ এ সময় বিএনপির আন্দোলনের টাকার উৎস কোথায় তা খোঁজ নিতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে অতীতের মতো সব ধরনের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

আরো পড়ুন