সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ

প্রকাশিত: রবিবার, জানুয়ারী ৮, ২০২৩

নাগরিক সংবাদ ডেস্কঃ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কর্মীসভা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। তবে সংঘর্ষের পর দুই পক্ষকে নিয়ে কোনও বৈঠকে বসেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাসে এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) বিকালে এই সংঘর্ষ ঘটে। এতে ১০ জন আহত হয়েছেন। মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওমর ফারুকের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংঘর্ষকালে একটি ইটের টুকরো তার চোখে এসে পড়ে। এতে তার চোখের মণি ফেটে যায়। শনিবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চোখের অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মো. এমাদুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পক্ষের সঙ্গে সহ-সভাপতি শরিফ হোসেন, সাব্বির মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসেন,‌ মোশাররফ হোসেন ও আকাশ ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় বিভিন্ন আবাসিক হলের ছাদে অবস্থান নিয়েছিলেন ছাত্রলীগের দুই পক্ষের কর্মীরা।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এই ধরনের ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখছি। শিক্ষার্থীদের জানমালের ক্ষতি করার সাথে যদি আমাদের কেউ যুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা চাই সবাই মিলেমিশে সংগঠন করুক, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখুক।’

শনিবার রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তফা সামছুজ্জামান বলেন, ‘সংঘর্ষের পর আমার জানামতে এখন পর্যন্ত দুই পক্ষকে নিয়ে বসা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আমি তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি এবং ধৈর্য্য ধরতে বলেছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘দুই পক্ষের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়নি। তবে ফোনে সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা তাদের শান্ত থাকতে ও সহযোগিতা করতে বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা না করে শিক্ষা পরিবেশ বজায় রাখতে বলেছি। গতকাল (শনিবার) রাতেও এমন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। আমি সবাইকে ফোন করেছি। কেউ যদি কাউকে আঘাত করতে আসে, পাল্টা আঘাত না করে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানাতে বলেছি। তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সবাইকে নিয়ে বসবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবারের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডি থেকে একটি প্রতিবেদন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জমা দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর পর গত বছরের ৩০ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ২০ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হন মো. এমাদুল হোসেন। সে সময় কমিটি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি না হলেও সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পরিবর্তন ও প্রশাসনে রদবদলের পর বর্তমান কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে মানতে পারছেন না কিছু নেতাকর্মী। এ নিয়ে কমিটির মধ্যেই বিদ্রোহী একটি বলয় তৈরি হয়।

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কেক কেটে উদযাপন করা হয়েছে। আলাদাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই বিরোধী পক্ষও কেক কেটে উদযাপন করেছে। এসব নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

আরো পড়ুন