সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫
প্রকাশিত: রবিবার, ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বেসিকো) এর ব্যবস্থাপক মোঃ জুলফিক্কার আলীর বিরুদ্ধে কারখানার মালামাল চুরি, ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্নসাত ও বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া চাকুরী নবায়নসহ ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। খুলনার রাজপরিবার হিসেবে পরিচিত শেখ বাড়ির সদস্যদের সাথে সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেননি কর্মীরা। তবে বর্তমানে বিএনপির রাজনৈতিক কিছু নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে ভোল পাল্টানোর চেষ্টা করছেন।
মোঃ জুলফিকার আলীর অপসারণ দাবি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বেসিকো’র ৩০ জন কর্মী।
অভিযোগে বলা হয়, বেসিকো’র ব্যবস্থাপক মোঃ জুলফিক্কার আলী (এইচআরএম এন্ড এডমিন) বেসিকো কারখানার রেস্ট হাউজের জন্য কর্তৃক ৪টি এয়ার কন্ডিশন, ওয়াশিং মেশিনসহ দামি দামি আসবাবপত্র ক্রয় করে। যা পরবর্তীতে জুলফিকার আলী ট্রাক ভর্তি করে নিয়ে যান। নষ্ট দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে ভূয়া নিলামের মাধ্যমে এসব মালামাল আত্নসাত করেন।
২০২২ সালের মার্চ মাসে হাফিজুল বারী বেসিকো কোম্পানির প্রথম স্বতন্ত্র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। হাফিজুল বারীর দায়িত্বকালে মোঃ জুলফিকার আলী, ব্যবস্থাপক (এইচআরএম এন্ড এডমিন) একে অপরের যোগসাজশে বিভিন্ন খাতে অগ্রিম লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে ভুয়া বিল-ভাউচার এর মাধ্যমে সমন্বয় করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বেসিকো কোম্পানির ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের অডিট রিপোর্টে আপ্যায়ন খাতের খরচ ছিল মাত্র ৬ হাজার টাকা, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের অডিট রিপোর্টে আপ্যায়ন খাতে ১৪ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৫৯ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সবচেয়ে বেশী অনিয়ম হয়েছে। যদিও ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের অডিট এখনো সম্পন্ন না হলেও কোম্পানির নিজস্ব হিসেবে বিভিন্ন মাসে বোর্ড মিটিং অনারিয়াম বাদে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা অগ্রিম উত্তোলন করা হয়েছে এবং নাম মাত্র খরচ করে বিভিন্ন ভূয়া ভাউচার তৈরি করে অগ্রিম টাকা গুলো সমন্বয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। এছাড়া অবৈধ ভাবে এক বছরে তিনজন উৎপাদন কর্মীর নামে ৪টি উৎসব বোনাস (২ টি ঈদ বাবদ এবং ২ টি পূজা বাবদ) উঠিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রমাণ রয়েছে।
কর্মীরা জানান, বেসিকোর ১৪তম বোর্ড সভা অবধি বোর্ড সভার এজেন্ডায় মোঃ জুলফিকার আলীর প্রমোশন ও চাকুরী নবায়ন এর বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি, কিন্তু সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজুল বারী বেসিকো কোম্পানির দায়িত্বে আসার পর তার সাথে যোগসাজশে বেসিকোর ১৫তম বোর্ড সভায় জুলফিকার আলী, সহকারী ব্যবস্থাপক (এইচআরএম এন্ড এডমিন) এর প্রমোশন বিষয়টি এজেন্ডা আকারে উত্থাপিত হয় কিন্তু উক্ত বোর্ড সভায়ও তার প্রমোশনের বিষয়টি বাতিল করা হয়। পরবর্তিতে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সহকারী ব্যবস্থাপক (এইচআরএম এন্ড এডমিন) থেকে একটি নোটের মাধ্যমে প্রমোশন পেয়ে ব্যবস্থাপক বনে যান। এমনকি বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাফিজুল বারী অবসরে যাওয়ার পর তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মোঃ জুলফিকার আলী, ব্যবস্থাপক (এইচআরএম এন্ড এডমিন) হিসেবে ২০২৭ সাল পর্যন্ত চাকুরী নবায়ন করেছেন।
তার এই সব অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বললেই কর্মীদের উপর চালানো হয় অত্যাচার।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মোঃ জুলফিকার আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিপু সিন্ডিকেট ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা তাদের অনিময় ঢাকতেই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। আমি কোন অনিয়ম করে প্রতিষ্ঠান চালাই না। যারা অবৈধ সুবিধা নিতে পারছে না তারাই এসব অভিযোগ করেছেন।