সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রকাশিত: সোমবার, অক্টোবর ৭, ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন খুলনা মহানগরী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, দেশ ও জাতির কল্যাণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের সমাজে পিতা-মাতার পরেই শিক্ষকের স্থান। আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার দায়িত্ব নেবে। তাই তাদের দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে মহান দায়িত্ব পালন করতে হবে শিক্ষক সমাজকে। এ সময় তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি শিক্ষা কারিক্যুলাম বাতিল, তাদের বেতন কাঠামোর বৈষম্য দূর করাসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য দেন। তিনি অবিলম্বে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করার জন্য এবং সরকারি-বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যের বৈষম্য দূর করার জন্য বর্তমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আহবান জানান। আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন খুলনা মহানগরীর উদ্যোগে রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আল-ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন খুলনা মহানগরীর সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারের বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সরকার। বক্তব্য রাখেন অফিস ও প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক ড. আজগর আলী।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন নর্দান ইউনিভার্সিটির রেজিষ্ট্রার ড. শাহ আলম। তিনি বলেন, গ্রীক দর্শন এর বিশটি দার্শনিক অসঙ্গতি তুলে ধরেন যার জবাব তাদের কাছে আজ অবধী নেই। এ ঘটনা তাকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক এর মর্যাদা এনে দেয়। তিনি বলেন, আমাদের এ পশ্চাদপদ জাতিকে একটি সভ্য, দক্ষ, আত্মনির্ভশীল জাতি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মূল অবদান রাখতে পারেন জাতীর শ্রেষ্ট সন্তাত শিক্ষকরা। কিন্তু যে শিক্ষকগণ তাদের মেধা যোগ্যতা ও ভালোবাসা দিয়ে জাতি গঠনে অবদান রাখবেন তাদের নূন্যতম সামাজিক ও আর্থিক নিশ্চয়তা থাকবে না তা হতে পারে না। অথচ দু:খজনক হলেও সত্য- বাংলাদেশে শিক্ষকদের মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল দেশটি থেকেও নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। তাই শিক্ষকগণ বাধ্য হচ্ছে তাদের অধিকার ও মর্যাদার ব্যাপারে কথা বলতে। তাই বিশ্ব শিক্ষক দিবসের ৩০ বছর পূর্তিকে মাইল ফলক হিসাবে নিয়ে সকলকে সোচ্চার হতে হবে -আমাদের কোপ্যারেন্ট অর্থাৎ শিক্ষকগণ আর যেন অবহেলিত ও অমর্যাদায় না থাকে। এ জন্য সেমিনারের পক্ষ থেকে সদ্য স্বাধীনতাত্তোর অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট আমাদের দাবী হলো-সকল পর্যায়ের শিক্ষক/শিক্ষাবিদ প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি শিক্ষা বিষয়ক ব্যপক সংস্কার কমিটি গঠন করা; নানামুখী শিক্ষা বাতিল করে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও নীতি-নৈতিকতাসম্পন্ন একমুখী বিশ্বমানের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের কার্যকর ব্যবস্থা করা; স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক আলাদা আলাদা বেতনকাঠামো না রেখে শিক্ষাগত যোগ্যতাকেন্দ্রিক বেতন ও অন্যান্য সুবিধা নির্ধারন করা; শিক্ষকদের অবসরের বয়স সকলের একই হতে হবে; শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্বতন্ত্র কমিশন থাকবে এবং ৬. শিক্ষকদের বেতন ও সুযোগ সুবিধা হবে সবচেয়ে উচু পর্যায়ের প্রভৃতি। শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা সংরক্ষনের জন্য সেমিনারের এই যৌক্তিক দাবীসমূহ হোক আমাদের জাতীয় দাবী এবং এগুলো বাস্তবায়নে সরকার সচেষ্ট হবেন এ আশাবাদ করেন।
অপরদিকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে খুলনা ইসলামীয়া কলেজের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা কলেজের অধ্যক্ষ মুহা. হারুনুর রশীদ হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রক্তব্য রাখেন কলেজ শিক্ষক আব্দুল মান্নান হাওলাদার, শ ম মোকাররম হোসেন, সৈয়দ হুমায়ুন কবীর, তানজিলা খাতুন প্রমুখ। সভায় অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগে এনটিআরসিএ’তে নিতে হবে; বেসরকারী শিক্ষকদের চাকুরি জাতীয়করণ করতে হবে; গভর্নিং বোডির হাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের নিগৃহীত হওয়া বন্ধ করতে হবে; গভর্নিং বডির প্রথা বাতিল করতে হবে; শিক্ষকদের প্রকৃত মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে।