রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ঠান্ডা থেকে বাঁচতে উষ্ণতার জন্য গরম পোশাকের দোকানে ভিড়

প্রকাশিত: মঙ্গলবার, জানুয়ারী ১৬, ২০২৪

আহাদ আলী, স্টাফ রিপোর্টারঃ কয়েকদিন ধরে জেঁকে বসেছে শীত। হিমেল বাতাস আর কুয়াশায় জনজীবন অনেকটাই থমকে গেছে। এমন অবস্থায় ঠান্ডা থেকে বাঁচতে উষ্ণতার জন্য গরম পোশাকের দিকে ছুটছে মানুষ। গত কয়দিন ধরেই খুলনা শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে সব ধরনের শীতের পোশাকের দোকানে মানুষে ভিড় করছে। সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

মার্কেট ও ফুটপাতের দোকান ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দোকানে কম দামে বিভিন্ন ধরনের শীতবস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, চাদর বেশি বিক্রি করছেন তারা। যে কারণে ক্রেতার সংখ্যা বেশি। শীতের পোশাকগুলো বিদেশ থেকে বেল আকারে আসে। আবার দেশের অনেক গার্মেন্টস থেকে স্বল্পমূল্যে গরম পোশাক নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। স্বল্পমূল্য হওয়ায় নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চমধ্যবিত্ত ক্রেতাদের চাহিদা থাকে এসব কাপড়ের প্রতি।
নগরীর দৌলতপুরে ফুটপাতের ধারে জ্যাকেট নিয়ে বসেছেন তরুণ ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম। নারায়ণগঞ্জ থেকে শীতের পোশাক এনেছেন তিনি। প্রতি পিস ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন ১০০ পিসের বেশি বিক্রি হচ্ছে তার। আব্দুর রহিমের মতো আরও ব্যবসায়ীরা শীতের জ্যাকেট, টুপি, সোয়েটার নিয়ে ব্যবসা করছেন দৌলতপুর বাজার এলাকায়।
ব্যবসায়ী নওশের আলী বলেন, সৈয়দপুর থেকে পোশাক নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতি পিস ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিসে ১০ থেকে ২০ টাকা লাভে পণ্য ছেড়ে দেন। এতে দিনে ১০০ থেকে ১৫০ পিস করে বিক্রি হয়।
খুলনার কয়রা থেকে আসা শামসুল ইসলাম বলেন, তিনি ব্যবসায়িক কাজে খুলনায় এসেছিলেন। এই সুযোগে প্রয়োজনীয় কেনাকাটাও করে নিয়েছেন তিনি। ভাতিজার জন্য দুটো সোয়েটার কিনেছেন তিনি।
বড়বাজারে শীতের পোশাক কিনছিলেন বিউটি আকতার। তিনি বলেন, শীতের পোশাক তো পর্যাপ্ত আছে। তবে এখন কুয়াশা পড়েছে তাই। মাথায় বাধার জন্য কিছু পাই কিনা দেখতে এসেছিলাম। পেয়েছি। মেয়ের জন্য শুধু নিয়েছি।
ডুমুরিয়া উপজেলা থেকে আসা অতীন্দ্র রায় বর্মন বলেন, এবার তো শীত অনেক বেশি। মোটা কাপড় ছাড়া হবে না। বড়বাজারে একটু কম দামে পাওয়া যায় বলে আসা। বাচ্চার জন্য কাপড় নেওয়া হয়েছে। নিজেদের জন্য এখনো শীতের পোশাক নেওয়া হয়নি।
মার্কেট ব্যবসায়ীরা জানান, এখন বিদেশ থেকে আসা কাপড়ের বেলের দাম বেড়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতি বেলে তাদের ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। কিন্তু কাপড়ের দাম বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে শীত দীর্ঘস্থায়ী হলে নিজেদের খরচ পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশাবাদী তারা।
ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার খুব কম টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। কারণ শীত এখন বেশি থাকে না। আগে রেল লাইনের ওপর ব্যবসায়ীরা বসতো। তখন জমজমাট অবস্থা ছিল এখন সেটি বন্ধ হয়ে মার্কেট ছড়িয়ে পড়েছে। এ জন্য ক্রেতারও কিছুটা সংকট থাকে।
ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো প্রতিদিন গড়ে প্রায় লাখ  টাকার বেচাকেনা করছেন ব্যবসায়ীরা। শীতের জন্য ব্যবসায়ীরা যা মাল উঠিয়েছিলেন তার মধ্যে অধিকাংশদের মাল প্রায় শেষ। এখন আবার নতুন মাল তোলা হচ্ছে।
গরম পোশাকের ব্যবসার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, মার্কেটে নতুন কাপড়গুলো খুব স্বল্প লাভে আমরা বিক্রি করছি। আর সেকেন্ডহ্যান্ড কাপড় যেগুলো বিদেশ থেকে আসছে, সেই বেলগুলোয় ২ থেকে ৫ হাজার টাকা দাম বেড়েছে। ডলারের দাম বাড়ায় এই বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
খুলনা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানিয়েছেন, রোববার খুলনায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ২ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিলো। গতকাল সোমবার ছিল ১১ দশমিক ৮ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন এই হারে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। কিন্তু বৃহস্পতিবার- শুক্রবার একটু বৃষ্টির আভাস রয়েছে। বৃষ্টিপাত হলে আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও কমে আসবে।

অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

আরো পড়ুন