সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রকাশিত: রবিবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, চিকিৎসকদের নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে। একজন চিকিৎসকই পারেন মানুষের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে। সুতরাং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সকলে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করলে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব বলেও তিনি মনে করেন। আল্লাহ’র পরেই ডাক্তারদের স্থান মনে করে যেহেতু রোগীরা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করে থাকেন সেহেতু ডাক্তারদেরও সে বিষয়টি মাথায় রেখে মানবিকতার সাথে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে নগরীর হোটেল সিটি ইন-এ ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) খুলনার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত চিকিৎসক সমাবেশ-২০২৪ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
এনডিএফ খুলনার সভাপতি ডা. এহসানুল কবীরের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. নজরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ডা. মাহমুদ হোসেন।
এনডিএফ খুলনার সাধারণ সম্পাদক ডা. আসাদুল্লাহিল গালিব এর পরিচালনায় স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ সভাপতি ডা. ফররুখ আহম্মদ। সমাবেশে বক্তৃতা করেন যশোর এনডিএফ সভাপতি ডা. শরীফুজ্জামান রঞ্জু, ডা. আসমা বিনতে খায়ের, ডা. ইসা নূর। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও কুষ্টিয়া-যশোর অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারি পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, টিম সদস্য মাষ্টার শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হোসাইন, মহানগর নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সেক্রেটারী এড. শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, জেলা সেক্রেটারী মুন্সী মিজানুর রহমান, খুলনা বিএমএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা: সেখ আকতারুজ্জামান, এনডিএফ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. আতিয়ার রহমান, খুলনা শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক ডা: শেখ আবু শাহীন, খুমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা: মহসীন আলী ফরাজী, খুলনা মেডিকেল কলেজের সাবেক সভাপতি ডা. খালিদুজ্জামান প্রমুখ।
এতে কুরআন তেলাওয়াত করেন ডা. নাঈম উদ্দিন। খুলনা মেডিকেল কলেজের সাবেক সভাপতি ডা. মুহিব্বুর রহমান রাফে ‘চিকিৎসা পেশায় মুসলিম চিকিৎসকদের ভুমিকা’ শর্ষিক একটি প্রেজেন্টেশন দেন।
এনডিএফ খুলনা জেলা সদস্য ডা. শামীম পারভেজ প্রিন্স সমাবেশে ১৬ দফা জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রস্তাবনা পেশ করেন। প্রস্তাবগুলো হল-১) মেডিকেল কলেজ ও সদর হাসপাতালগুলোতে সপ্তাহে ২৪ ঘন্টা ইমারজেন্সী ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কনসাল্ট্যান্সির ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং সে অনুপাতে লোকবলও বৃদ্ধি করতে হবে, ২) চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও সাপোর্টিং স্টাফ আনুপাতিক হারে বাড়ানো ও নিয়োগ দিতে হবে, ৩) মেডিকেল টেকনিক্যাল কাজের জন্য উপযুক্ত ট্রেনিং ছাড়া কাউকে কাজে নিযুক্ত না করা অর্থাৎ সবক্ষেত্রে যথাপোযুক্ত ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করতে হবে, ৪) চিকিৎসাসেবার সব জায়গাতেই পূর্ণাংগ রেফারল সিস্টেম চালু করতে হবে, ৫) মেডিকেল কলেজ ও সদর হাসপাতালগুলোতে সারজারি বিভাগে অপারেশনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সিরিয়ালের জন্য রুগিকে হাসপাতালে ভরতি থাকতে না হয়, সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, ৬) কোন রুগিকে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে যেন ফ্লোরে থাকতে না হয়, সে ব্যাপারে রাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে প্রয়োজনীয় বেডের সংখ্যা বাড়ানোর দায়িত্ব নিতে হবে, ৭) জনগণ ও চিকিৎসককে পারস্পরিক কাউন্টার পারট হিসেবে দাড় না করানো এবং করমোস্থলে সম্পুর্ণ নিরাপত্তামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, ৮) বিরাজমান ক্যাডার বৈষম্য নিরসন কল্পে কৃত্ত পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, ৯) চিকিৎসা শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবাকে বিশ্বমানে উন্নীত করণের লক্ষ্যে চিকিৎসকদের বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং এ সকল করমোসূচীতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং যথাযথ নীতিমালা প্রনয়ন ও তার সঠিক অনুসরণ করতে হবে, ১০) পোস্টগ্রাজুয়েট ডিগ্রীকে আন্তর্জাতিক অপৎবফরঃরড়হ করতে হবে যাতে বহিরবিশ্বে কাজের ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়, ১১) প্রাইভেট পোষ্ট গস্খাজুয়েট ট্রেইনিদের ভাতা ৫০ হাজার করা এবং মেডিকেল অফিসারদের জন্য নবম গ্রেডের সমমানের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে, ১২) চিকিৎসকদের পদন্নোতির চলমান নীতিমালাকে ঢেলে সাজিয়ে সুপার নিউমারী পদন্নোতির ব্যবস্থা করতে হবে, ১৩) চিকিৎসার বাণিজ্যিকিকরণ রোধ এবং এ সেক্টরকে দালালদের দৌরাত্মমুক্ত করতে হবে, ১৪) ওষুধসহ সকল প্রকার চিকিৎসা উপকরণসমূহের উপর থেকে ভ্যাট/ট্যাক্স কমাতে হবে। প্রয়োজনে ভূরতুকি প্রদান করতে হবে, ১৫) বেসরকারী মেডিকেল কলেজগুলোতে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রনয়ণ করতে হবে, ১৬) রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক বিবেচনায় মেডিকেল কলেজগুলোকে এ্যাপপ্রæভাল না দিয়ে, নীতিমালা অনুযায়ী যথাযথ মান নিয়ন্ত্রণ করে অনুমোদন দিতে হবে এবং প্রতি ৩ বছর অন্তর উচ্চ পরজায়ের প্রতিনিধির ভিজিটের মাধ্যমে মনিটরিং করে এ্যাপপ্রæভাল নবায়ন করতে হবে, ১৬) । প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা এমনকি রেজিষ্টেশন বাতিল করতে হবে।
সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, চিকিৎসা সেবার মধ্যদিয়ে ইসলামের সৌন্দর্য প্রচারে ডাক্তারদের যথেষ্ঠ ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে।