বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

অবশেষে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজা ও দাফন তার অসিয়তকৃত জায়গা বাদ দিয়ে পিরোজপুরে সম্পন্ন

প্রকাশিত: মঙ্গলবার, আগস্ট ১৫, ২০২৩

নাগরিক সংবাদ ডেস্কঃ অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনা কাটিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজা ও দাফন তার অসিয়তকৃত জায়গা বাদ দিয়ে পারিবারিক সিদ্ধান্তে পিরোজপুরে সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে পিরোজপুরের সাঈদী ফাউন্ডেশন এলাকায় জানাজার নামাজে ইমামতি করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

এর আগে পিরোজপুরে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই কান্নায় ভেঙে পড়েন জামায়াতের নেতাকর্মীসহ অনেক সাধারণ মানুষ। বর্তমানে তার মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে সাঈদী ফাউন্ডেশনের সামনের মাঠে রাখা আছে। পরবর্তীতে দলীয় ও পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে সোমবার রাতে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে মরহুমের অসিয়তকৃত খুলনাস্থ মাদ্রাসায় দাফনের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। খুলনায় এই দাফন ঠেকাতে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করাসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। ওই রাতে পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, রবিবার বিকালে কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান মাওলানা সাঈদী। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে শাহবাগ এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জড়ো হন। সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে জামায়াতের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, মঙ্গলবার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মাওলানা সাঈদীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা ঢাকায় মাওলানা সাঈদীর জানাজা অনুষ্ঠানের দাবিতে নানা স্লোগান দেন।

ভোর রাত তিনটার দিকে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ এম্বুলেন্সে করে পুলিশ বের করতে চাইলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং দাঁড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা জামায়াত শিবির কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে গাড়ির পাশ থেকে চলে যান। ফজরের নামাজের পর অ্যাকশনে যায় পুলিশ। ভোর ৫টার কিছু পর হাসপাতালে বাইরে থেকে টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে জামায়াত কর্মীরা। একপর্যায়ে পুলিশের অ্যাকশনের মুখে পিছু হটে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। এসময় মাওলানা সাঈদীর মরদেহ বের করতে গেলে এম্বুলেন্সের চাকা পাংচার হয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ সদস্যরা পাংচার হওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি নিজেরা ঠেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে আসেন। শাহবাগ মোড় পেরিয়ে বারডেম হাসপাতালের সামনে ঠেলে আনার পর অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে মাওলানা সাঈদীর মরদেহ তুলে দেন। পরবর্তীতে সেই অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশি নিরাপত্তায় পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়।

অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

আরো পড়ুন