সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশ, জনগণ ও সমাজের প্রত্যাশা পূরণে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে

প্রকাশিত: সোমবার, জানুয়ারী ৯, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেছেন, ব্যাপক প্রত্যাশা সামনে নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো। কিন্তু এখনো বহুক্ষেত্রে সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে একের পর এক কৌশলগত পরিকল্পনা গৃহীত হলেও মাঝপথে তা থমকে দাঁড়ায়, আবার নতুন করে পরিকল্পনা হয়। ফলে সামগ্রিকভাবে লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ক্যারিশমেটিক এবং ভিশনারি লিডার। তিনি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরপরই দেশের উন্নয়নে নানামুখী পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনে তিনি শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ড. কুদরত ই খুদার নেতৃত্বে গঠিত শিক্ষা কমিশন সুপারিশ প্রদান করে। পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত না হলে ওই শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হতো। তাহলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আজ ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হতো, জাতির প্রত্যাশা পূরণ হতো।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে, দিকনির্দেশনা দিতে হবে। সমাজের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। বৈশ্বিক পরিবর্তনের ধারায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার যুগোপযোগিতা নিরূপণ করে তা ধারণ ও আত্মস্থ করে নিজেদের পরিবর্তন ঘটাতে না পারলে, খাপ খাওয়াতে না পারলে আমরা টিকে থাকতে পারবো না। দেশ, জনগণ ও সমাজের প্রত্যাশা পূরণে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য শিক্ষক সমাজকে দেশের প্রত্যাশা পূরণে নেতৃত্বে দিতে হবে। তিনি শিক্ষকদের অনুকরণীয় শিক্ষক হওয়ার আহ্বান জানান।
৯ জানুয়ারি (সোমবার) সকাল ৯টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি স্ট্র্যাটেজি (এনআইএস) শীর্ষক এক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউজিসি সদস্য বলেন, উচ্চশিক্ষায় এখনও অনেক পরিবর্তন প্রয়োজন, অনেক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন দরকার। তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ইউজিসির অনেক ভালো সুপারিশও বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, ফলাফল প্রকাশের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রারম্ভেই শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে মূল্যবান একটি বছর পার হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই প্রবণতা চলে আসলেও তা নিরসনে এখনও পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে নানাভাবে তার সম্পৃক্ততার কথা তুলে তিনি বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে এবং দেশে উচ্চশিক্ষায় অনেকগুলো ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। তিনি বর্তমান উপাচার্যের নেতৃত্বে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আরও বিকশিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার অর্থ আত্মনির্ভরশীল সুখি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্য অর্জনে দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে জাতি গঠনের মুখ্য দায়িত্ব শিক্ষকদের। শিক্ষাক্ষেত্রে আজ যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সে ধারার সাথে খাপ খাওয়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আমরা ইতোমধ্যে ০১ জানুয়ারি থেকে ওবিই কারিকুলা অনুসরণের কাজ শুরু করেছি এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এনআইএসসহ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। উপাচার্য ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কাজে সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ‘একাডেমিক লিডারশিপ টু ফ্যাসিলিটিজ চেঞ্জ’ এবং ‘কোয়ালিটি এডুকেশন ফর ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিং’ দুটি সেশন পরিচালনা করেন ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। এছাড়া ‘এনআইএস- কনসেপ্টস এন্ড ইস্যুস’ এবং ‘এনআইএস-ইমপ্লিমেন্টেশন’ শীর্ষক দুটি সেশন পরিচালনা করেন বিপিএটিসির পরিচালক মোহাম্মদ রাজিবুল ইসলাম। ফিডব্যাক গ্রহণ করেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. জগদীশ চন্দ্র জোয়ার্দার। প্রশিক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের ১১৮ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন।

অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

আরো পড়ুন