সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রকাশিত: রবিবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
স্টাফ রিপোর্টারঃ খেজুরের কাঁচা রস না খাওয়ার পরামর্শ দিলেন খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ।
রোববার খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তিনি এই পরামর্শ দেন।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে তার সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, করোনাভাইরাস এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে জেলা উপজেলা কমিটি সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। খুলনা জেলায় করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ শতভাগ সম্পন্ন করা হয়েছে। মোট ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৯ ডোজ করোনা টিকা প্রদান করা হয়েছে। গত ১ ডিসেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পেইনে ৪৩ হাজার ৪৭৮ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। জেলায় প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকলকে সর্তক থাকতে হবে। এ পর্যন্ত ২৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসা শেষে ২৪৫ জন রোগী বাড়ি ফিরেছেন এবং ৮ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। নিপা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে খেজুরের কাঁচা রস না খাওয়া পরামর্শ দেন সিভিল সার্জন।
সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, আগের তুলনায় খুলনার আইনশৃঙ্খলা ভালো অবস্থানে রয়েছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে সকলকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
সভায় কেএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (নর্থ) মো. মোসফেকুর রহমান জানান, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মাদক, ইয়াবা ও ফেনসিডিল সেবনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে রাতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও সকল ওয়ার্ডে বিট পুলিশিং কার্যক্রম চলমান আছে।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান সভায় জানান, বিগত নভেম্বর মাসে জেলায় ১৪১টি মাদক বিরোধী টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে। মাদক সংক্রান্ত অপরাধের কারণে ১৬৭ জনকে আসামি করে ১২৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসময় আলামত হিসেবে ১৮ কেজি ২৬ গ্রাম গাঁজা, ২টি গাঁজার গাছ, ৪৬৫৫ পিস ইয়াবা, ২৭০ বোতল ফেনসিডিল, এ্যালকোহল ৫.৪ লিটার, হেরোইন ৩ গ্রাম ও ২ বোতল দেশীয় মদ জব্দ করা হয়েছে।
সভায় জেলা মহিলা বিষয়ক দপ্তরের উপ-পরিচালক হাসনা হেনা জানান, জেলার চারটি উপজেলায় ৪টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ১৯টি উঠান বৈঠক করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, জেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যেতে হবে। রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি মাছে অপদ্রব্য পুশের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের আরো অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। মাদক ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে সকল মসজিদে নামাজের পরে এ বিষয়ে ইমামদের দিক নিদের্শনামূলক বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ করেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মুনিম লিংকন সভায় বিগত মাসে খুলনা জেলা ও মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরেন। খুলনা জেলা অধিক্ষেত্রে বিগত নভেম্বর মাসে ১৪৫টি মামলা দায়ের হয়েছে, যা বিগত অক্টোবর মাসে দায়ের হওয়া মামলার চেয়ে ১৫টি কম। খুলনা মহানগরী অধিক্ষেত্রে নভেম্বর মাসে ১২৫টি মামলা দায়ের হয়েছে, যা বিগত অক্টোবর মাসে দায়ের হওয়া মামলার চেয়ে ৮টি কম।
সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, প্রেসক্লাবের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।